অনেক রক্তের বিনিময়ে পেয়েছি আমাদের স্বাধীনতা তারও পূর্বে এই ভাষাকে। যে ভাষায় আজ আমরা নিজেদেরকে স্বাধীন বাঙ্গালী বলি। যে ভাষায় সেদিন আমরা স্লোগান দিয়েছি। বলেছি-স্বাধীনতা চাই! চাই মুক্তি! চাই ভালোবাসা! ভালোবাসা... ভালোবাসা ছিল বলেইতো সেদিন প্রাণ দিয়েছে অকাতরে রাজপথে; হানাদারে দিয়েছি তার পরেও। সব কিছুর শুরুতো এই ভাষার জন্যই! ভাষা থেকেই ভালোবাসা। ভালোবাসা থেকে স্বাধীনতা। স্বাধীনতা থেকে আজ সব। ভাষা ছিল বলেইতো আমরা বুঝেছি মা' কে মায়ের কষ্ট কে। এই মাটিকে। আমাদের বোঝা হয়ে গিয়েছিল পাখির মতো শেখানো বুলিতে আমাদের মন ভরবে না আমার প্রাণের যে আকুতি তা অন্য ভাষায় মিটবার নয়। মিটে কি কখনও? আর তাইতো আমরা আজ বাঙ্গালী! গর্ব করে ফুল দিতে ছুটে চলি ২১শে ফেব্রুয়ারি ছুটে চলি ২৬শে মার্চ; ১৬ই ডিসেম্বর। সেদিন মোরা কোটি প্রাণ মিলে গেয়েছিলাম আজ সারা বিশ্ব কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে গাইছে- "আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি"! মা-তোমায় ভালোবাসি! বাংলা-তোমায় ভালোবাসি! স্বাধীনতা-তোমায় ভালোবাসি!!
স্বাধীনতা হতে চাই
আশির দশকে জন্ম আমার আমি কি করে দেখবো ভাষা আন্দোলন; মুক্তিযুদ্ধ কি করে জানবো স্বাধীনতা কাকে বলে। তাইতো স্বাধীনতা আমার কাছ স্বপ্নের মতো স্বপ্নের চেয়েও বেশি কিছু! সেদিন স্বাধীনতাকে খুঁজতে গিয়েছিলাম জিরো পয়েন্ট দোয়েল চত্বরে। লোকে বলে এখান থেকেই নাকি স্বাধীনতার শুধসর পৌছে দেওয়া হয়েছিল প্রতিটি বাঙ্গীর ঘরে ঘরে। অথচ স্বাধীনতার স্বারকে গিয়ে দেখি অভুক্ত কিছু কুকুর শুয়ে আছে অনাহারী মানুষের পাশে। আমি গিয়েছিলাম মুজিব নগরের আম্রকাননে সে আম গাছটি আজ আর বেঁচে নেই মরে গেছে কোনসে কালে বাঙ্গালী তার খবরও রাখেনি। স্বাধীনতাকে খুঁজতে গিয়েছি শহর থেকে শহরে অজোপাড়া গায়ে; প্রত্যন্ত অঞ্চলে। মুক্তিযোদ্ধাদের নীড়ে গিয়ে জেনেছি- তারা আজ আর ভাবতে চায়না সেদিনের কথা বিতৃষ্ণায়! পাজরে লুকানো গভীর ক্ষোভে; হতাশায়; লজ্জায়! শাহবাগ মোড়ে ফুলের দোকানে ঘুড়তে ঘুড়তে হঠাৎ মনে হল- অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে এখনি কি পাওয়া যাবে কোন চিহ্ন? যেথায় রাস্তার কালোপিচ একসময় লালে রঞ্জিত হয়েছে বাঙ্গালীর রক্তে? অনেক খোঁজাখুঁজি করেও মূর্তির গায়ে ঘন শ্যাওলার প্রলেপ ছাড়া খুঁজে পাইনি কোন কিছু। খুঁজে পাইনি একফোঁটা রক্তের দাগ ভাষা শহীদের অথবা ৭১ এর! এখানে এখন পুরো এলাকার বাতাস ভারী হয়ে আছে মাদকাসক্তে। আমি আশ- নিরাশায় বসে পরি গোল চত্বরে। কেউ যেন আমার কানে কানে বলে গেল- মধুর ক্যান্টিনে যাওয়া যেতে পারে। গরম চায়ের কাপে সেখানেও তো ঝড় উঠতো তরুণ প্রাণে স্বাধীনতা আন্দোলনে। নিজের ভিতর স্বতঃ:ফূর্ত আনন্দ নিয়ে দ্রুত পায়ে ছুটি মধুদার ক্যান্টিনে। মন বলে- যাক; এবার না হয় কিছুটা দুধের স্বাদ ঘোলে মিটবে। এখানে এখনও ওভালটিন মিশ্রিত চায়ের কাপে ধোঁয়া উঠছে কথার গমগমে। এখনও তরুণ তরুণীর আড্ডা বসেছে ল্যাপটপে কথা হচ্ছে মুঠোফোনে। কথা হচ্ছে মুখোমুখি- ক্যাটরিনা কাইফ তার নতুন ছবিতে কতটা যৌবনাবেদন দেখিয়েছে। এ্যাঞ্জেলিনা জোলী নতুন করে আবার দত্তক নিল কিনা অথবা শেয়ার বাজারে কোন কোম্পানির শেয়ার কতটা দ্রুত ছুটবে সৌভাগ্যের দৌড়ে। আমি চুপচাপ বসে থাকি এককাল গরম চায়ের কাপে। আশির দশকের সন্তান আমি কোথায় গেলে খুঁজে পাবো স্বাধীনতাকে? আমি স্বাধীনতা চাই! যা নিয়ে আমি গর্ব করে বলতে পারি- "আমি সেই বীর বাঙ্গালী"। আমি স্বাধীনতাকে খুঁজ ফিরি সবার মাঝে শহর-নগর-বন্দরে; স্তরে স্তরে। আশির দশকের প্রজন্ম আমি ক্ষোভ জাগে; কেন জন্মালামনা আরো ত্রিশ বছর আগে তাহলে হয়তো আজ আমিই হতাম স্বাধীনতা। আমার যে স্বাধীনতা হবার সাধ জাগে ব্যকুলে।
স্বাধীনতা
অসংখ্য প্রদীপ আজোও জ্বলে অশ্রু বিহীন আঁখিতলে একটাই মুখ খুঁজে ফিরে কোটি মুখের অন্তরালে। একটা ছবি চিরচেনা হারিয়েছে কোথায় কেউ জানেনা, একটাই স্লোগান সবার মুখে স্বাধীন দেশের সংকল্প বুকে! স্বপ্ন ছিল সবার চোখে বাংলা মায়ের মুক্তি নিতে, দিয়েছে মান- প্রাণ বলিদান সে আশা আজ কোনসে তটে? অসংখ্য হাত আজও কাঁকন ছাড়া সাদা শাড়ি; দু:স্বপ্নে ঘেড়া, এইনা দেশকে ভালোবেসে সব হারিয়ে ছন্নছাড়া। জানতো কি তারা হবে কভু ত্যাগের প্রদীপ নিভু নিভু্, দেশদ্রোহীরা সাজবে প্রভু স্বাধীন দেশে যারা সংখ্যালঘু। জানতো কি মা সন্তান হারা বীর সেনানির স্থী যারা, তাদের বিসর্জন যাবে বৃথা স্বাধীনতার মুক্তি গাঁথা? অগণিত বুক আজও দুমড়ে কাঁদে দু:খ-ব্যথা-স্মৃতির নদে। কি চেয়েছিল আর আজ কি পেয়েছে প্রশ্ন করে বিবেকে; ঐ না রবে।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।
প্রতি মাসেই পুরস্কার
বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।
লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন
প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।